Logo
Logo
×

ডাক্তার আছেন

সন্তানের সামান্য জন্মগত ত্রুটিতে মায়েরা দুঃশ্চিন্তা কেন করবেন না? 

Icon

ডা. সাঈদ এনাম 

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৩, ১২:৩০ পিএম

সন্তানের সামান্য জন্মগত ত্রুটিতে মায়েরা দুঃশ্চিন্তা কেন করবেন না? 

ডা. সাঈদ এনাম

সন্তানের ছোটখাটো কোনো জন্মগত ত্রুটি থাকলে মা-বাবা ভীষণ হতাশ হয়ে পড়েন। তাদের মন ছোট হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সে সন্তানকে সবার কাছ থেকে আড়াল করে রাখেন। নিজেকে অপরাধী ভাবেন। অথচ জগৎ সেরা কয়েকজন বিজ্ঞানী ছিলেন তাদের ছিল নানা রকমের জন্মগত ত্রুটি। তারা মোটেও দমে যাননি। তাদের মা-বাবা হতাশ হয়ে থেমে যাননি। 

যেমন— 
আলবার্ট আইনস্টাইন: বিশ্বের অন্যতম সেরা গণিতবিদ ও পদার্থবিদ। ছোটবেলা কথা বলা শিখতে তার অনেক দেরি হয়েছে। ছিলেন একটু হাবাগোবা প্রকৃতির। খানিকটা অটিজমের বৈশিষ্ট্য ছিল। এ ছেলেকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না— এটিই ছিল তার সম্পর্কে সবার ভবিষ্যদ্বাণী।

টমাস আলভা এডিসন: যে বিজ্ঞানীর জন্ম না হলে পৃথিবী আজও থাকত অন্ধকারে। এই মোবাইলও হয়তো আবিষ্কার হতো না। অথচ তিনি ১২ বছর বয়স পর্যন্ত পড়তে পারেননি। স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। পড়াশোনায় অমনোযোগী, খারাপ ছিল ও ভীষণ দুষ্ট বলে। ছেলেবেলায় পত্রিকা বিক্রি করতেন স্টেশনে। অথচ তিনিই পৃথিবী কে করলেন আলোকিত। সেরা ইনভেন্টার। এটি একমাত্র তার মায়ের অবদান। স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার পর থেকে তার মাই তাকে পড়াতেন বাড়িতে।

হেলেন কেলার: হেলেন ছিলেন অন্ধ ও বধির। শিশুকালেই রোগে ভুগে দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি হারান। ওই প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে হয়েছেন বিশ্ববিখ্যাত। 

আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল: টেলিফোন যন্ত্রের আবিষ্কারক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলের ছিল লার্নিং ডিসেবিলিটি (কোনো কিছু শিখতে না পারা)। তার মা ও স্ত্রী উভয়েই ছিলেন বধির।  প্রাইমারি ও হাইস্কুল পড়াশোনা ঠিকমতো সম্পন্ন করতে পারেননি।

জন মিল্টন: জন মিল্টন ছিলেন ইংরেজি লেখক ও কবি। মাত্র ৪৩ বছর বয়সে দৃষ্টি হারান। ওই দৃষ্টিহীন অবস্থায় লিখেন— মহাকাব্য প্যারাডাইস লস্ট।

লর্ড বায়রন: লর্ড বায়রন, ব্রিটেনের সর্বশ্রেষ্ঠ রোমান্টিক কবি ছিলেন জন্মগত খোঁড়া। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতেন। (ক্লাব ফুট)

মাইকেল বল্টন: বল্টন একজন সুপরিচিত গায়ক। তিনি বধির। ঠিকমতো শুনতে পান না।

স্টিফেন হকিংস: স্টিফেন হকিংস পদার্থবিদ ও গণিতবিদ। মোটর নিউরোন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে আজীবন হুইলচেয়ারে কাটিয়েছেন। কথা বলতে পারেন না। অথচ তিনি সেরা আধুনিক বিজ্ঞানীদের একজন।

অর্ডিনারিদের দেখা যায়, চেনা যায়। এক্সট্রা-অর্ডিনারিদের দেখা যায় না, চেনা যায় না। হয়তো দেখা বা চেনার ক্ষমতা আমাদের নেই। 

লেখক: ডা. সাঈদ এনাম 
এমবিবিএস (ডিএমসি), এম ফিল (সাইকিয়াট্রি) 
বিসিএস (স্বাস্থ্য) 
সহকারী অধ্যাপক, ( সাইকিয়াট্রি) 
ফেলো, আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম